বুধবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৫

ন্যায়পরায়নতা ও ইহসান : ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি


মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী

মহান আল্লাহ মানব জাতির হেদায়তের জন্যে রাসূল (সা.)-এর কাছে পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল করেন। এই কুরআন এমন একটি বিস্ময়কর গ্রন্থ যার তুলনার সমকক্ষ কোন গ্রন্থ নেই, অমুসলিমরাও এটা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। আরবে কবিতা চর্চার রীতি ছিল। উকায মেলায় পৃথিবী বিখ্যাত কবিরা আসতেন, তাদের কবিতা পাঠ করতেন। যাদের কবিতা নির্বাচিত হতো তাদের কবিতা কা‘বা শরীফে ঝুলিয়ে রাখা হতো। সূরা কাউসার অবতীর্ণ হওয়ার পর রাসূল (সা.) সেটা লিখে কা‘বা শরীফে ঝুলিয়ে দেন এবং ঘোষণা দেন যে, এই সূরার পরের লাইন মিলিয়ে দেওয়ার জন্য। রাসূল (সা.)-এর সময়ে আরবের প্রসিদ্ধ ও বয়োবৃদ্ধ কবি ছিলেন লবীদ ইবনু রবী‘আহ। পরবর্তীতে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি সূরা কাউসারের শেষে লিখেন ليس هذا كلام البشر অর্থ্যাৎ- এটা কোন মানুষের কথা নয়।সুতরাং বুঝা গেল সে এটা স্বীকার করছে যে কুরআন আসমানী গ্রন্থ।
আল্লাহ তা‘আলা সেই কুরআনে ইরশাদ করেন-
{ إِنَّ اللَّه يَأْمُر بِالْعَدْلِ وَالْإِحْسَان وَإِيتَاء ذِي الْقُرْبَى وَيَنْهَى عَنْ الْفَحْشَاء وَالْمُنْكَر وَالْبَغْي يَعِظكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ
-নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে ন্যায়পরায়নতা, ইহসান, ও আত্মীয়তা রক্ষার নির্দেশ দিচ্ছেন এবং যাবতীয় অশ্লীল, গর্হীত কাজ ও বিদ্রোহ করা থেকে নিষেধ করছেন।
আয়াতটি নাযিল হওয়ার পর রাসূল (সা.) ওয়ালীদ ইবনু মুগীরাহকে শুনালেন। ওয়ালীদ এই আয়াত শুনে বলল- إن له لحلاوة وإن عليه لطلاوة
এই আয়াতে কতো মিষ্ঠতা এবং এই আয়াত সব কিছুর নির্যাস।(শুআবুল ঈমান)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রা.) বলেন-
إن أجمع آيةٍ في القرآن ِلـخيرٍ وشرٍّ هذه الآية
ভালো এবং মন্দ কাজের বিবরণ প্রদানে পবিত্র কুরআন শরীফের আয়াত সমূহের মধ্যে সর্বাধিক অর্থবহ আয়াত হলো এই আয়াত।
আদল বা ন্যায়পরায়নতা সর্ব ক্ষেত্রে রক্ষা করতে হবে। বিচারকার্য, ইবাদত, পারিবারিক জীবনসহ সকল ক্ষেত্রে আদল রক্ষা করতে হবে।
প্রিয়নবী (সা.)-এর জীবনে আমরা ন্যায়পরায়নতার উজ্জল দৃষ্ঠান্ত খুঁজে পাই। কুরাইশ বংশের এক সম্ভ্রান্ত মহিলার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ আসল। অপরাধ প্রমাণিত হলে রাসূল (সা.) হাত কাটার নির্দেশ দিলেন। কোন কোন মহিলা হযরত আয়শা (রা.)-এর কাছে গেলেন এবং রাসূল (সা.)-এর কাছে অপরাধ মার্জনার সুপারিশ করতে বললেন। তিনি অপারগতা প্রকাশ করে বললেন উসামা বিন যায়দকে প্রেরণ কর। কারণ রাসূল (সা.) তাকে ও তাঁর বাবাকে খুব ¯েœহ করেন। উসামা (রা.) সুপারিশ করলে রাসূল (সা.) দৃঢ় কন্ঠে বললেন وأيمُ اللَّهِ ! لَو أنَّ فاطمةَ بنتَ محمَّدٍ سرَقَت لقطعتُ يدَها.
আল্লাহর কসম! যদি আমার মেয়ে ফাতিমাও চুরি করতো তাহলে আমি তাঁর হাত কেটে দিতাম। (সুবহানাল্লাহ)
এটাই হচ্ছে ন্যায়পরায়নতা, ইনসাফ। ইনসাফ রক্ষায় কোন স্বজনপ্রীতি নেই। আপন-পর সবাই সমান।
আরেকটি হাদীস বর্ণিত আছে যে, আমীরুল মুমিনীন হযরত আলী (রা.) এর খেলাফতকালে তার একটি যুদ্ধবর্ম হারিয়ে যায়। কিছুদিন পর তিনি সে বর্ম এক খৃস্টানের কাছে দেখতে পেলেন। আলী (রা.) এ বিষয়ে তার নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারক শুরাই্হ (রা.)-এর কাছে বিচারপ্রার্থী হলেন। বিচারক শুরাইহ খৃস্টানকে বললেন আলী (রা.) যা বলছেন তা কি ঠিক? সে বলল বর্মটি আমার হাতে আর আমীরুল মুমিনীনকে আমি মিথ্যাবাদি বলতে পারিনা। তখন বিচারক শুরাইহ আলী (রা.) কে বললেন আপনার কথার পক্ষে কোন প্রমাণ আছে? তিনি বললেন না, আমার কাছে কোন প্রমান নেই। ইসলামী উসূল অনুযায়ী বিচারক খৃস্টানের পক্ষে রায় দিলেন। খৃস্টান লোকটি কয়েক পা এগিয়ে যাওয়ার পর ফিরে এস বলল এটাই হচ্ছে নবীদের ফয়সালা। এই বর্মটির মালিক আলী (রা.)। অতপর লোকটি কালিমা পড়ে মুসলমান হয়ে গেল।
এটা হচ্ছে সাহাবায়ে কিরামের আদর্শ। তাদের আদর্শ দেখে অমুসলিমগণ ইসলামের ছায়াতলে এসেছে। আলী (রা.) যদি জোর করে বর্মটি নিয়ে নিতেন তাহলে সে হয়ত মুসলমান হতো না।
এখানে লক্ষনীয়, হযরত আলী (রা.) নিজে খলীফা আর শুরাইহ তার নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারক। শুরাইহ ন্যায়বিচার করেছেন। আলী (রা.) তার দাবীর পক্ষে প্রমাণ পেশ করতে পারেন নি। তাই ইনসাফ অনুযায়ী খলীফার পক্ষে রায় না দিয়ে খৃস্টানের পক্ষে রায় দেন। আলী (রা.)ও রায় মেনে নেন। এটাই ইসলামের ন্যায়পরায়নতা। বিচারের ক্ষেত্রে কোন স্বজনপ্রীতি নেই।
আমরা ইবাদতের ক্ষেত্রেও আদল ঠিক রাখবো। কোন প্রকার সীমা লঙ্ঘন করবো না। তিনজন সাহাবী আম্মাজান আয়শা (রা.)-এর কাছে রাসূল (সা.)-এর ইবাদত সম্পর্কে জানতে চাইলেন। তারপর তাদের একজন বললেন-আমি আর কোন রাত্রে ঘুমাব না, সারা রাত ইবাদত করব। অপরজন বললেন আমি এখনো বিয়ে করিনি, আর কোন দিন বিয়ে করব না বরং ইবাদত করব। আরেকজন বললেন আমি সারা জীবন রোযা রাখব।
রাসূল (সা.) শুনে অত্যন্ত রাগ করলন এবং বললেন- আমি নবী; রাত্রে ইবাদতও করি আবার নিদ্রা যাপনও করি, আমি বিবাহ-শাদীও করেছি, আমি রোযা রাখি আবার মাঝে মাঝে রোযা ছাড়ি।
এই হাদীসে রাসূল (সা.) এটাই বুঝালেন ইবাদতের ক্ষেত্রেও ন্যায়পরায়নতা রক্ষা করতে হবে। রাসূল (সা.) যে তরীকা প্রদর্শন করেছেন সে তরীকাতেই ইবাদত করতে হবে।
আপনি আপনার সন্তানাদির ক্ষেত্রেও ইনসাফ করতে হবে। একাধিক সন্তান থাকলে মীরাছের ক্ষেত্রে সমতা বজায় রাখতে হবে।
আমরা পাশ্চাত্য সভ্যতার ঘৃণ্যতাকে গ্রহণ করেছি। অথচ এই সভ্যতা আমাদের কিছুই দিতে পারে নি। গত কয়েক মাস আগে আমেরিকায় একজন কৃষাঙ্গ হত্যা করা হয়েছে শুধুমাত্র কালো হওয়ার অপরাধে। আমাদের নবী (সা.) চৌদ্দশত বছর আগে বলে গেছেন-
لَا فَضْلَ لِعَرَبِيٍّ عَلَى أَعْجَمِيٍّ ، وَلَا لِعَجَمِيٍّ عَلَى عَرَبِيٍّ ، وَلَا لِأَحْمَرَ عَلَى أَسْوَدَ ، وَلَا أَسْوَدَ عَلَى أَحْمَرَ إِلَّا بِالتَّقْوَى
আরবী-অনারবীদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই, শ্বেতাঙ্গ-কৃষাঙ্গের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।
হযরত বিলাল (রা.) হাবশী, কালো দাস ছিলেন। তিনি মুসলমান হওয়ার কারণে তপ্ত বালুকাময় মাঠে তার বুকে পাথর রেখে নির্যাতন করা হতো। আবূ বকর (রা.) তাকে ক্রয় করলেন এবং আযাদ করে দিলেন। রাসূল (সা.) হাবশী বিলালকে ্ইসলামের প্রথম মুআয্যিন নির্বাচন করলেন। এমনকি মক্কা বিজয়ের পর রাসূল (সা.) তাকে কা‘বার পিঠে তুলে আযান দিতে বললেন। ইসলামে সাদা-কালোর কোন পার্থক্য নেই। ইসলামে সবাই এক।
আয়াতের দ্বিতীয় নির্দেশ হলো-ইহসান। আরবী ইহসান শব্দটি হুসনুন থেকে এসেছে। হুসন অর্থ সৌন্দর্য। আমাদের জীবনের সকল কিছু সুন্দরভাবে করতে হবে। আমাদের প্রত্যেককে একজন মুসলিম হওয়ার পাশাপাশি একজন মুহসিন হতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন- وأحسنوا إن الله يحب المحسنين
এক্ষেত্রে আমাদের অনুপম আদর্শ হচ্ছেন মুহসিনে আ‘যম হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
আমাদের নামায, আমাদের আচার-আচরণ, স্বভাব-চরিত্র সুন্দর্যমন্ডিত হওয়া উচিত। নামায সুন্দর হওয়ার ব্যাপরে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন-
الإحسانُ أن تعبد الله كأنك تراه فإن لم تكن تراه فإنه يراك
-তুমি এমনভাবে নামায পড় যেন আল্লাহ তা‘আলাকে দেখছ আর যদি দেখতে না পার তাহলে ধারণা রাখো আল্লাহ তোমাকে দেখছেন। আমাদের নামায যতো সুন্দর হবে আমাদের জীবন ততো উজ্জল হবে।
ইহসান বা দয়া দিয়ে মানুষ অনেক কিছু করতে পারে। প্রসিদ্ধ ঘটনা, এক জান্নাতী রমনীকে বিড়ালের সাথে দুর্ব্যবহার করার কারণে জাহান্নামে যেতে হয়েছে। আর এক ব্যভিচারিনী মহিলা কুকুরের প্রতি দয়া করে ঈমানদার হয়ে বেহেশতী হয়েছে।
আমরা রাসূল (সা.) এর জীবনে ইহসান বা দয়ার বিরল দৃষ্টান্ত পাই। হযরত যায়দ (রা.) দাস ছিলেন। উকায মেলায় ক্রয় করে আম্মাজান খাদিজা (রা.) কে তাঁর খালু উপহার দিয়েছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে পেশ করেন। রাসূল (সা.) তাকে তাঁর পুত্রের মর্যাদা দান করেন। তখনও এই আয়াতটি নাযিল হয়নি-
مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِّن رِّجَالِكُمْ وَلَٰكِن رَّسُولَ اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ ۗ وَكَانَ اللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا
অনেক দিন পর তার স্বজনরা তার খোঁজ পেয়ে তার বাবা-চাচা রাসূল (সা.)-এর কাছে আসলেন। এসে বললেন আপনি যা চান আমরা দিতে রাজি আছি, বিনিময়ে আপনি আমাদের ছেলেকে দিয়ে দিন। রাসূল (সা.) তাদেরকে বললেন
ادعوه فخيراه فإن اختاركما فهو لكما بغير فداء وإن اختارني فو الله ما أنا بالذي أختار على من اختارني وقال زيد: والله يا رسول الله أنت مني بمنزلة الأب والعم وما أختار عليك أحداً قط)) فقال له والده: أتختار العبودية على الحرية وعلى أبيك وعمك يا زيد؟
তাকে ডাকেন এবং তার ইচ্ছার উপর ছেড়ে দিন। সে যদি আপনাদের সাথে যেতে চায় তাহলে কোন বিনিময় লাগবে না আমি তাকে দিয়ে দিব। আর যদি সে আমার কাছে থাকতে চায় তাহলে আল্লাহর কসম! যে আমার কাছে থাকতে চায় আমি তাকে রাখব। (যায়দ রা. কে জিজ্ঞেস করার পর) তিনি বললেন- ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি-ই আমার বাবা, আপনি-ই আমার চাচা।
অতপর যায়দ (রা.)-এর বাবা বললেন- যায়দ! তুমি তোমার বাবা-চাচাকে ছেড়ে স্বাধীনতার পরিবর্তে পরাধিনতাকে গ্রহণ করলে?
রাসূল (সা.) শুধু মানুষকে দয়া করেন নি; জীন-ইনসান, পশু-পাখি, বৃক্ষ-লতাসহ সকল সৃষ্টির প্রতি দয়া ছিল অবারিত। রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন- তোমরা যখন পশু কুরবানী করো তখনও উত্তমভাবে যবেহ করো, যে ব্যক্তি পশু কুরবানী করবে সে যেন তার ছুরি উত্তমভাবে ধারালো করে নেয়।
হযরত আবূ বকর (রা.) একদিন তার এক খাদিমকে একটু ধমক দিচ্ছিলেন, রাসূল (সা.) শুনে বললেন- খাদিমদের প্রতি এরূপ আচরণ আর সিদ্দীক এক সঙ্গে হতে পারে না।
সুতরাং আমরা মানুষের প্রতি দয়া করব, আল্লাহর সৃষ্ঠ জীবদের প্রতি দয়া করব। প্রিয়নবী (সা.) ইরশাদ করেন- তোমরা পৃথিবীবাসীর প্রতি দয়া করো, আকাশে যিনি আছেন তিনি তোমাদের দয়া করবেন। মহান আল্লাহ যেন আমাদের তাওফীক দান করেন। আমীন।
আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন- كونوا مع الصادقينতোমরা সত্যবাদীদের সঙ্গী হও।
সে জন্যে আমরা আউলিয়ায়ে কেরামের দরবারে আসি। তাঁদের দরবারে আসলে, তাদের সঙ্গী হলে আমরা আল্লাহর পরিচয় লাভ করতে পারি। ওলী কারা? রাসূল (সা.) ওলীদের পরিচয় দানে বলেন- যাদেরকে দেখলে আল্লাহর কথা স্মরণ হয় তাঁরাই ওলী।
সোহবত বা সংস্পর্শের অনেক প্রভাব রয়েছে। একটি উদাহরণ দেই, আমরা যখন শিশুদের সাথে কথা বলি তখন আমাদের মধ্যে শিশু সুলভ আচরণ চলে আসে। আমরাও শিশুর সুরে ও স্বরে কথা বলি যা স্বাভাবিক কথা-বার্তায় চিন্তাও করতে পারি না। তখন আমরা একপ্রকার শিশু হয়ে যাই। তদ্রুপ ওলী আল্লাহদের কাছে আসলে আমাদের মন-মানসিকতা আল্লাহর দিকে ধাবিত হয়। তাদের আচরণ ও আমল দ্বারা আমরাও প্রভাবিত হই।
ইমাম শাফেঈ (র.) কোন সমস্যায় পড়লে ইমামে আযম আবূ হানীফা (র.)-এর মাযারে চলে যেতেন। সেখানে নামায পড়তেন, যিয়ারত করতেন। ইমাম শাফেঈ নামাযে রাফউল ইয়াদাইন এর পক্ষে। কিন্তু তিনি ইমাম আযমের কবরে গিয়ে নামাযে রাফউল ইয়াদাইন করতেন না। ইমাম আবূ হানীফার সম্মানের জন্য। সুতরাং আমরা ওলী আল্লাহদের সম্মানের প্রমাণ পাই ইমাম শাফেঈ (র.)-্এর আমল থেকে।
আর পবিত্র শুক্রবার দিনের কিছু আমল রয়েছে। হাদীস শরীফে এসেছে- যে ব্যক্তি শুক্রবার সূরা কাহ্ফ তিলাওয়াত করবে, পরবর্তী শুক্রবার পর্যন্ত তাকে নূর দান করা হবে। অনেকে জানতে চান সূরাটি কখন পড়া হবে। জুম‘আর পূর্বে পড়ে নেয়া ভাল। যদি না পারেন আসরের পূর্ব পর্যন্ত যে কোন সময় পড়ে নিতে পারেন।
আরেকটি হলো বেশি বেশি দুরূদ শরীফ পড়া। হাদীস শরীফে আছে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন- তোমরা শুক্রবার বেশি বেশি দুরূদ পড় কেননা তোমাদের দুরূদ আমার নিকট পৌছানো হয়। সাহাবায়ে কিরাম আরজ করলেন ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি যখন কবরস্থ হবেন তখনও? রাসূল (সা.) জবাব দিলেন إن الله حرم على الأرض أن تأكل أجساد الأنبياء আল্লাহ তা‘আলা নবীগণের দেহ ভক্ষণ করা মাটির জন্যে হারাম করে দিয়েছেন।
রাসূল (সা.)-এর এই হাদীস বাতিল আকীদাকে খন্ডন করে। যারা হায়াতুন্নবীকে অস্বীকার করেন তাদের ভ্রান্ত আকীদা এই হাদীস দ্বারা খন্ডন করা হয়েছে। রাসূল (সা.) তাঁর কবরে স্বশরীরে জীবিত আছেন, এই কথা কাফেররাও স্বীকার করে। সে জন্যে তারা তাঁর লাশ মুবারক চুরির ষড়যন্ত্র করেছিল।
দুরূদ শরীফ যে পড়ে তার নাম, পিতৃপরিচয়সহ রাসূল (সা.)-এর দরবার হাজির করা হয়। ’দালাইলুল খায়রাত’, এবং ইবনুল জাওযীর ‘আল ওয়াফা’ কিতাবে আছে মুহব্বতের সহিত যে দুরূদ শরীফ পড়ে রাসূল (সা.) নিজ কান মুবারক দ্বারা তার দুরূদ শুনতে পান।
অনুলিখন- মাহমুদুল হাসান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন